ইজিপ্টাই নামক একটি মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এই মশাটি সাধারণত দিনের বেলা কামড়ায়, বিশেষ করে সকাল ও বিকেলের দিকে। ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরন রয়েছে—DEN-1, DEN-2, DEN-3 ও DEN-4। একজন ব্যক্তি একাধিকবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে রোগটি জটিল আকার ধারণ করতে পারে, যা ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার কিংবা ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে রূপ নিতে পারে।
ডেঙ্গুর সাধারণ উপসর্গের মধ্যে রয়েছে হঠাৎ করে জ্বর (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত), তীব্র মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, গা-হাত-পায়ে ব্যথা, বমি বমি ভাব, র্যাশ, এবং শরীরে পানিশূন্যতা। অনেক সময় রক্তপাত, প্রেসার কমে যাওয়া এবং অঙ্গ বিকলের মতো জটিলতাও দেখা দিতে পারে। তাই এসব উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
এই রোগের নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ না থাকলেও উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসার মাধ্যমেই রোগীকে সুস্থ করা সম্ভব। প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ দিয়ে জ্বর নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তবে রক্তপাতের আশঙ্কায় অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন ব্যবহার নিষিদ্ধ। রোগীকে প্রচুর তরল খাবার ও পানীয় দিতে হবে। প্লাটিলেট বা হিমাটোক্রিটের মাত্রা কমে গেলে প্রয়োজন হতে পারে হাসপাতালে ভর্তি।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যক্তিগত ও সামাজিক সচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি অপসারণ করতে হবে, কারণ এডিস মশা এমন স্থানে বংশবিস্তার করে। ফুলদানি, টব, এসির নিচের পানি, পুরনো টায়ার কিংবা খোলা পাত্র নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। মশারি ব্যবহার, মশারোধী ক্রিম, স্প্রে এবং হাত-পা ঢাকা জামা পরার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
এছাড়া সামাজিকভাবে এলাকাভিত্তিক পরিচ্ছন্নতা অভিযান, মশক নিধন কর্মসূচি এবং জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা জরুরি। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ফগিং ও ব্লিচিং কার্যক্রম নিয়মিত চালানো প্রয়োজন।
পরিশেষে বলা যায়, ডেঙ্গু এখন আমাদের নগরজীবনের একটি চিহ্নিত স্বাস্থ্যঝুঁকি। তবে ভয় না পেয়ে সচেতনতা এবং সময়মতো ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। মনে রাখতে হবে—সচেতনতাই ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা
আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না। প্রয়োজনীয় ঘরগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে *